কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) : কোরবানির ৭২ ঘণ্টা পার হলেও এখনো অপসারণ করা হয়নি অস্থায়ী পশুর হাটের বর্জ্য ও বাঁশ খুঁটি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কোরবানির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের কথা থাকলেও হাটগুলোতে তা মানা হয়নি। ফলে এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগানগর ইউনিয়নের আমবাগিচা, জিনজিরা এবং হাসনাবাদ রোডে স্থাপিত পশুর হাটের বর্জ্য এখনো রাস্তার উপর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। হাট শেষ হয়ে যাওয়ার পরও রাস্তার ওপর থাকা বাঁশ ও খুঁটি সরানো হয়নি, ফলে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে যানজটের পাশাপাশি মশা-মাছির উপদ্রবও বেড়েছে।
সোমবার বিকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা, আগানগর আমবাগিচা মাঠে লাগানো বাঁশখুটির একটিও খুলে নেওয়া হয়নি। বাবুবাজার ব্রিজের নিচে রাস্তার উপর বাঁশ এখনো লাগানো রয়েছে। হাটের ভেতরে থাকা গোবর ও কাদা মিশ্রিত খড় ও গো-খাদ্যের উচ্ছিষ্ট সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে নদী দূষণ করা হচ্ছে। কদমতলী এলাকায় বাবুবাজার ব্রিজের ঢালে লায়ন মার্কেটের উল্টোপাশে মহাসড়কের ওপর রাখা হয়েছে ময়লার স্তূপ।
একই অবস্থা জিনজিরা ও হাসনাবাদ হাটে। সেখানেও জনি টাওয়ারের সামনে সড়কের ওপর রাখা হয়েছে জিনজিরা হাটের ময়লার স্তূপ। হাসনাবাদ কন্টেইনার রোডে স্থাপিত অস্থায়ী পশুর হাটের ময়লা সরাসরি ফেলা হচ্ছে বুড়িগঙ্গা নদীতে। রাস্তার বাঁশ-খুটি এখনো রয়েছে এতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় রিকশাচালক মোঃ শহীদ বলেন, “হাট শেষ হলেও বাঁশ-খুঁটি না খোলায় অনেক রাস্তা বন্ধ রয়েছে। চলাচল করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।”
আমবাগিচা এলাকার বাসিন্দা এবছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাহমিনা খান জেসি বলেন, “এইচএসসি পরীক্ষা সামনে। পড়াশোনায় মন বসাতে পারছি না। চারপাশে মশার উপদ্রব অনেক বেড়েছে। আর হাটের গোবরের উটকো গন্ধে বমি বমি লাগে, কিছুতেই মনোযোগ ধরে রাখতে পারছি না।”
এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকের অভিযোগ, প্রতি বছরই ঈদের পর এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। কিন্তু যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। তারা দ্রুত বর্জ্য অপসারণ ও রাস্তা মুক্ত করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে জিনজিরা হাটের ইজারাদার মোজাদ্দেদ আলী বাবু বলেন, আমরা ময়লা পরিষ্কার করার জন্য লোককেদের সাথে চুক্তি করে তাদেরকে টাকা দিয়ে দিয়েছি কিন্তু তারা শর্ত মোতাবেক কাজ করেনি। এতে একটু জনভোগান্তি হচ্ছে স্বীকার করে তিনি বলেন দুই-একদিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। না হলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ শতাংশ টাকা রেখে দেয়া হয়েছে, সেটা দিয়ে উপজেলা প্রশাসন নিজেরাই পরিষ্কার করে নিবে।
আগানগর হাটের ইজারাদার আরশাদ রহমান সপুর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ব্যর্থতার দায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের উপর চাপিয়ে দিয়ে বলেন, আমরা অনেক বছর হাট-ঘাটের ইজারা নেইনি তাই এ বিষয়টি এটা সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা চেষ্টা করছে দ্রুত সম্ভব এগুলো অপসারণ হয়ে যাবে। আর মহাসড়কের পাশে মায়লার স্তুপ আগামীকাল আমি নিজে গিয়ে সরিয়ে ফেলবো।নদীতে ময়লা আবর্জনা ফেলার বিষয়টা আমি অবগত নই।
সার্বিক বিষয়ে জানতে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি তা রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিলেও তার কোন জবাব দেননি তিনি।