কেরানীগঞ্জ (ঢাকা):
ঢাকার কেরানীগঞ্জে ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সম্ভাব্য রুট পরিবর্তনের দাবিতে কেরানীগঞ্জে রাজেন্দ্রপুরে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে অবরোধ বিক্ষোভ মিছিল করে এলকাবাসী। আজ রবিবার ( ১০ আগষ্ট) দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুরে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ কর্মসূচি করেন।
গ্রাম বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সরাও এবং জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও নিজেদের ভিটামাটি রক্ষা করব _এই স্লোগানে বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করে একাত্মতা প্রকাশ করে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু, স্কুল- কলেজ শিক্ষার্থী ও বৃদ্ধের অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ গণসমাবেশে পরিনত হয়।
এলাকাবাসী জানান, ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রস্তাবিত টার্নিং পয়েন্ট স্থাপনের লক্ষ্যে তেঘরিয়া ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আমাদের পূর্বপুরুষদের বসতভিটা, মসজিদ-মন্দির-উপাসনালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও খেলার মাঠসহ সর্বস্ব আমাদের হারাতে হবে।আমরা উন্নয়নের বিরুদ্ধে নই,কিন্তু উন্নয়ন হবে মানবিক ও পরিবেশসম্মত। মাত্র এক কিলোমিটার পূর্বদিকে সরিয়ে নিলেই গ্রাম রক্ষা পায়। সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু প্রিয় প্রাঙ্গনের মত এত বড় ফাঁকা জায়গা থাকতে কেন আমাদের বসতভিটা উচ্ছেদ। এত সহজ সমাধান থাকতে কেন মানুষের ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করবেন? সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় কমে যাবে। সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বিপুর প্রিয় প্রাঙ্গন বাঁচাতেই বসতভিটার উপর দিয়ে রাস্তার পরিকল্পনা করেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার। সরকারের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, জনগণের কথা শুনুন, গ্রাম বাঁচান। জনগণের কণ্ঠ শুনুন, ভিটেমাটি রক্ষা করুন।
বাঘৈর নগরের স্থানীয় বাসিন্দা আল ইমরান বলেন, গত ১৫ বছরে শুধুমাত্র একটি ইউনিয়ন থেকে (তেঘরিয়া) ১২০০ অধিক জমি করা হয়েছে, যা চরম অন্য। তেঘরিয়া ইউনিয়নে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কেন্দ্রীয় কারাগার, প্রিয় প্রাঙ্গন, ঝিলমিল আবাসিক, সাউথ টাউন, RAB-10, মায়াকানন, আমর্ড পুলিশ—প্রতিটি প্রকল্পে আমরা জমি দিয়েছি। আর কত দেবে তেঘরিয়াবাসী?”
ঢাকা জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক জুয়েল মোল্লা বলেন, প্রস্তাবিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বর্তমান নকশা বাস্তবায়িত হলে গ্রামটির শত শত বছরের ইতিহাস ও বসবাসযোগ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে। তেঘরিয়া ইউনিয়ন শুধু একটি গ্রাম নয়, এটি একটি ঐতিহ্য। এখানে হাজারো মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কেউই ঘরবাড়ি নিয়ে টিকে থাকতে পারবে না। তাই সরকারকে বলবো—মানুষ নয়, রুট পরিবর্তন করুন।