কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) : বুড়িগঙ্গা নদীর তীর দখল করে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বাংলোবাড়ি গুড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ—পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ—পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এ বাড়িটি গুড়িয়ে দেয়।
বুধবার সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের কাউটাইল এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এর উপস্থিতিতে কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল (দক্ষিণ) সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় অভিযানে বুড়িগঙ্গা নদীর সীমানা দখল করে গড়ে ওঠা তিনটি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। যার মধ্যে সাবেক এই প্রভাবশালী প্রতিমন্ত্রীর বাংলো বাড়িটিও ছিল।
জানা গেছে, নসরুল হামিদের বাংলোবাড়ি উচ্ছেদ এ অভিযানে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ এটি শুধু একটি অবৈধ স্থাপনা নয়, বরং রাজনৈতিক ক্ষমতার ছায়ায় কীভাবে নদীর সম্পদ দখল হয়েছে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। প্রশাসনের এই পদক্ষেপ স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে— আইনের শাসনের ঊর্ধ্বে কেউ নয় এবং পরিবেশ সংরক্ষণে প্রশাসন কোনো ছাড় দেবে না।
বিআইডব্লিউটি’এ কর্মকর্তারা জানান, শুধু বুড়িগঙ্গা নয় শীতলক্ষ্যা, তুরাগ এবং বালু নদীতেও একযোগে অবৈধ দখলমুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। নদীর সীমানা পিলার স্থাপন, ভরাট জমি পুনরুদ্ধার এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ সবকিছুই একই প্রক্রিয়ার অংশ।
বিআইডব্লিউটিএ’র ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষা, তুরাগ ও বালু এই চারটি নদীর সীমানা পিলার রক্ষায় ধারাবাহিক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যত শক্তিশালী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানই হোক না কেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে নদী দখলমুক্ত করা হবে।
অভিযানে ফায়ার সার্ভিস,দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ, র্যাব, ঢাকা পল্লি বিদ্যুৎ সমীতি—৪, ও আনসার সহায়তা করেন।
এ উচ্ছেদ কার্যক্রম ছিল বিআইডব্লিউটিএ ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের দুই দিনের বিশেষ কর্মসূচির অংশ, যা ২০ ও ২১ আগস্ট যৌথভাবে পরিচালিত হচ্ছে। পোস্তগোলা সেতু থেকে ধোপাতিয়া বা কাউটাইল খেয়াঘাট পর্যন্ত নদীর তীর লক্ষ্য করে এ অভিযানের মাধ্যমে দখলদারদের অবৈধ স্থাপনা ও ভরাট জমি অপসারণ করা হয়।