কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুলে পারিবারিক কলহের জেরে বাবাকে ‘পিটিয়ে হত্যার’ পর মরদেহ বস্তায় ভরে ধানক্ষেতে পুঁতে রাখার ঘটনা ঘটেছে। ৯৯৯-এ কল পেয়ে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার দক্ষিণ ডেইলপাড়া কুরিমারিয়ারছড়া এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মোহাম্মদ রফিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিহত মোহাম্মদ ছৈয়দ (৫০) ওই এলাকার বাসিন্দা। গ্রেপ্তার মোহাম্মদ রফিক নিহত মোহাম্মদ ছৈয়দের ছেলে।
নিহতের প্রতিবেশীরা জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মোহাম্মদ ছৈয়দের বাড়ির আশপাশ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে ধানক্ষেতের পাশে সদ্য মাটি চাপা দেওয়া একটি শার্ট দেখতে পান। সেখান থেকে গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশকে জানান তারা। পরে পুলিশ মাটি সরিয়ে বস্তাবন্দি অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে।
গ্রেপ্তার রফিকের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, ‘সোমবার ভোরে তার শ্বশুর মোহাম্মদ ছৈয়দ স্থানীয় মসজিদে নামাজ আদায় করতে যান। সকালে বাড়ি ফিরলে শাশুড়ির সঙ্গে তর্ক হয়। একপর্যায়ে তার স্বামীও কলহে জড়িয়ে পড়েন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্বামী রফিক বাবাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে শ্বশুর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে মৃত্যু হলে মরদেহ বস্তাবন্দি করে ঘরে ফেলে রাখা হয়।’ ঘটনার ব্যাপারে কারও কাছে প্রকাশ করলে তার স্বামী ‘বাবার মত’ পরিণতি ভোগ করারও হুমকি দেয় বলে জানান অভিযুক্তের স্ত্রী।
এদিকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে সৈয়দের স্ত্রী, দুই সন্তান রফিক ও সাহাবউদ্দিন জিয়া গত সোমবার রাত ১০টার দিকে বাড়ির পাশে ধানক্ষেতে মরদেহ পুঁতে রাখেন। মঙ্গলবার সকালে ছৈয়দের স্ত্রী ও সন্তানরা আত্মগোপনে যান।
‘পারিবারিক কলহের’ জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াছ খানের। তিনি বলেন, বিষয়টি শোনার পর পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় মাটি সরিয়ে বস্তাবন্দি মৃতদেহটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে নিহতের ছেলে মোহাম্মদ রফিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর জড়িত অন্যদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে বলে জানান ইলিয়াছ খান।
ওসি জানান, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
সূত্র: দৈনিক সমকাল